কিশোর-কিশোরীদের জন্য দরকার পর্যাপ্ত ঘুম ।

কিশোর-কিশোরীদের জন্য ঘুম খুবই প্রয়োজন। গবেষকেরা বলছেন, পর্যাপ্ত ঘুম শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং তা স্মৃতিশক্তি ঠিক রাখাসহ মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম রাখতে ঘুম খুবই প্রয়োজনীয়।

যতই শিখবে ততই ঘুমাবে
সম্প্রতি হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল ও ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ওপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়। নতুন একটি জটিল গেম শেখানোর পর তাতে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের সেখানেই ‘ঘুমিয়ে যেতে’ বলা হয়। পরের দিন দেখা যায়, যারা রাতে ভালো করে ঘুমিয়েছে, সেই শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করছে।

আর যারা ৬ ঘণ্টার চেয়ে কম ঘুমিয়েছে বা ঠিকঠাক ঘুমাতে পারেনি, তারা ভালো ফল করতে পারেনি বা আগের চেয়ে খারাপ ফল করেছে।

শেখার জন্য ঘুম কেন এত প্রয়োজন? ‘সায়েন্টিফিক আমেরিকান’ সাময়িকীতে এ বিষয়ে নতুন একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সারা দিনের নানান ঘটনাপ্রবাহ থেকে সংগ্রহ করা সব তথ্য-উপাত্ত থেকে বাছাই করে ‘মনে রাখতে হবে’ এমন তথ্য-উপাত্ত স্মৃতিগুলো আলাদা করার কাজটা মস্তিষ্ক করে থাকে এই ঘুমের সময়ই।

তাই কেউ যত বেশি শিখতে থাকবে, তার ঘুমের চাহিদাও তত বেড়ে যেতে থাকবে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এই গভীর শিক্ষণের জন্য তথ্যভান্ডার গড়ে তোলার কাজে ব্যবহূত মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হঠাত্ই কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে, এমনকি বাকি মস্তিষ্কও এ বিষয়ে সজাগ থাকে।

ফলে গবেষকেরা বলছেন, লেখাপড়া, নানা ধরনের কাজ শেখা এবং জগত্ সম্পর্কে জ্ঞানের ভিত গড়ার সময়টায় ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি।

কার্যকর শিক্ষার জন্য ঘুম নিয়ে কোনো আপস করা চলবে না। কিন্তু কৈশোর এবং কৈশোর থেকে তারুণ্যে পদার্পণের সময়টাতেই ঘুম নিয়ে বেশি হেলাফেলা করে এবং ঘুমের স্বভাবের বারোটা বাজায় ছেলেমেয়েরা। কিছুটা যত্ন নিয়ে, কিছুটা বুঝিয়ে আর কিছুটা পরিবেশগত সহায়তা করে কিশোর-কিশোরীদের ঘুমের স্বভাব ঠিক করার চেষ্টা করতে পারেন অভিভাবকেরা।

কিশোর-কিশোরীদের ঘুমের স্বভাব ঠিকমতো গড়ে তুলতে এবং নিয়মিত তার চর্চায় উত্সাহিত করতে পারেন পরিবারের বড়রা। ঘুম ঠিক থাকলে স্কুলের লেখাপড়ায় মনোযোগ বাড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা এবং সব ধরনের শিক্ষার ক্ষেত্রেই ভালো করার সম্ভাবনা বাড়বে অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদের।

ঘুমের রুটিন

একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠা খুবই জরুরি। এমনকি ছুটির দিনেও এই একই রুটিন বজায় থাকা ভালো। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে লম্বা করে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করাটা ভালো। আর সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে ঘুমানোর জন্য খুবই অল্প শব্দে ‘সফট মিউজিক’ বা হালকা গান-বাজনা শোনার অভ্যাস করা যেতে পারে।

Spread the love
%d bloggers like this: