বাংলার ফুটবল জাদুকর !

আজ যদি আমি আপনার অথবা আপনাদের কাছে জানতে চাই একজন ফুটবল জাদুকর এর নাম, তবে উত্তর কার নাম বলবেন? হয়তবা ম্যারাডোনা-পেলের নাম, যদি বর্তমান সময়ের খেলয়াড়দের ভিতর থেকে বলেন তাইলে হয়ত বলবেন মেসি কিংবা রোনালদোরাও। কিন্তু যদি বলি বাংলার একজন ফুটবল জাদুকর নাম বলতে। হয়ত অনেকেই বিষ্মিত। আবার অনেকের মুখে মুচকি হাসি। হ্যা ঠিক ফুটবল জাদুকর সামাদের কথা বলা হচ্ছে। এবার চলুন তবে তার সম্পর্কে একটু জেনেনি। 

11853955_877445615673927_1988085602_n  ফুটবল জাদুকর সামাদের পুরা নাম সৈয়দ আবদুস সামাদ। ১৮৯৫ সালে ভারতের বিহার রাজ্যে জন্ম তাঁর। তিনি ড্রিবলিং এবং গোলে লক্ষ্যভেদী শটের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তাঁর গতি ছিল অসাধারণ। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই তিনি ফুটবল খেলতে পাড়ি জমান সে সময়ের সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও খেলাধুলা চর্চার পীঠস্থান কলকাতা মহানগরে। সামাদ ভারতীয় জাতীয় দলের জার্সি গায়েও খেলেছেন। ১৯২৬ সালে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব। তিনি সে সময় ভারতের হয়ে বার্মা (মিয়ানমার), সিলোন (শ্রীলঙ্কা), সুমাত্রা-জাভা-বোর্নিও (ইন্দোনেশিয়া), মালয় (মালয়েশিয়া), সিঙ্গাপুর, হংকং, চীন ও ইংল্যান্ড সফর করেন। চীনের বিপক্ষে একটি ম্যাচে ভারত ৩-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পরেও তাঁর দেওয়া চারটি গোলে ৪-৩ গোলে অবিস্মরণীয় এক জয় পেয়েছিল। তাঁর খেলা দেখে ওই সময় স্কটিশ এক ফুটবলবোদ্ধার মন্তব্য ছিল, ‘সামাদ ইউরোপে জন্ম গ্রহণ করলে সে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে স্বীকৃতি পেত।’ ওই সময় ঔপনিবেশিক শাসনের জাঁতাকলে পড়ে কখনোই পাদ-প্রদীপের আলোয় আসা হয়নি বাংলার ফুটবল জাদুকর সামাদের।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তিনি স্থায়ীভাবে চলে আসেন পূর্ব বাংলায়। বাংলার এই কৃতি সন্তান ১৯৫৭ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বেতনভুক ফুটবল কোচ হিসেবে চাকরি শুরু করেন। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকার তাঁকে সম্মানিত করে রাষ্ট্রপতি পদক দিয়ে। ১৯৬৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বর্তমান বাংলাদেশের ২টাকার ডাক টিকিটে এই কৃতি সন্তানের ছবি সম্বলিত।

(এ.এ.এম.)

Spread the love
%d bloggers like this: