মাস্ক পরলে বাড়ে করোনার ঝুঁকি, দাবি মার্কিন বিশেষজ্ঞদের

দুরন্ত ডেস্কঃ বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে সবাই মাস্ক কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্ক পরলে সংক্রমণ থেকে বাঁচার চেয়ে সংক্রমিত হওয়ারই আশঙ্কা বেশি।

নিউইয়র্ক টাইমস এর প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়।

টাইম ম্যাগাজিনের খবরে বলা হয়, আপাতত করোনাভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় হাত ধোঁয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপেরই পরমার্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটার পর থেকেই বিভিন্ন দেশে মাস্কের সংকট দেখা দিয়েছে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সুপার মার্কেটগুলোতে মাস্ক নেই, এমন প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। তবে মাস্ক কী আসলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে?

যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যানডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিভাগের মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. উইলিয়াম স্ক্যাফনার বলেছেন, সহজাতভাবেই মানুষ মনে করে তার নাক ও মুখ স্কার্ফ বা মাস্ক দিয়ে ঠেকে রাখলে চারপাশে ঘুরতে থাকা এসব ভাইরাস থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি মিলবে। কিন্তু শ্বাসযন্ত্রের সম্পর্কিত রোগ যেমন ফ্লু এবং কভিড-19 এর ক্ষেত্রে এটি কার্যকর নয়। যদি তাই হতো তাহলে সিডিসি বহু বছর আগেই এমন পরামর্শ দিতো। কিন্তু তারা এমনটি করেনি, কারণ তারা বিজ্ঞানভিত্তিক সুপারিশ করে থাকে।

সিডিসি বলছে, সংক্রমণ ঘটাতে পারে এমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা যেগুলো বাতাসে ঘুরে বেড়ায় তা সার্জিক্যাল মাস্ক পরলেও আটকানো সম্ভব না। এমনকি এসব মাস্ক চেহারা চারপাশে স্নাগসিলও তৈরি করে না। বরং যাদের মধ্যে ইতোমধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা গেছে এবং বাইরে যেতে হবে, তাদের মাস্ক পরার পরামর্শ দেয় সিডিসি; কেননা করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তি যখন কাঁশি বা হাঁচি দেয় তখন যেন তার চারপাশের মানুষজন সুরক্ষিত থাকতে পারে। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবাকারী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও এসব মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে সিডিসি।

এমনকি স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে এন95 রেসপিরেটরস মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেয় না সিডিসি। এরইমধ্যে মাস্ক কেনা বন্ধে মানুষজনকে আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সার্জেন জেনারেল ডা. জেরোমি অ্যাডামসও মাস্ক কেনা বন্ধ করতে মানুষজনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এসব মাস্ক সাধারণ মানুষের করোনায় সংক্রমিত হওয়া ঠেকাতে পারবে না। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার সময় মাস্ক না পরলে, তারা এবং আমাদের কমিউনিটি ঝুঁকিতে পড়বে।

ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ডা. অ্যাডামস বলেন, এমনকি মাস্ক পরলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তিনি বলেন, যারা সঠিকভাবে মাস্ক পরতে পারে না তাদের মুখে হাত দেয়ার প্রবণতা বেশি এবং এর কারণে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

Spread the love
%d bloggers like this: