যাদের কোন বন্ধু হয় না

শাহাদাত হোসাইন: আমাদের জীবনে যাপনে বন্ধুদের গুরুত্ব প্রত্যেকেই জানি। কষ্টের দিন গুলো কিংবা সুখকর সকল মুহূর্তে পাশে তো কেবল বন্ধুরাই থেকে। বন্ধুদের মধ্যে সুন্দর সময়ের মতনই আসে খারাপ সময়ও। ঝগড়া কিংবা তর্কে বিস্বাদময় হয়ে উঠে বন্ধুত্ব গুলো। বন্ধুহীন দিন গুলো যেন কাটতেই চায়না আমাদের, বিশেষ করে আমার।
কিন্তু তখনই মনে পড়ে যায় আমার এক বন্ধুর কথা। যে বন্ধুর কথা আমার খুব ভাবায়। কারন এমন কিছু মানুষ আছে আমাদের এই শহরেই এমন কি এই সমাজেই আমাদের খুব কাছেই বেড়ে উঠে কিন্তু তাদের কোন বন্ধু হয় না। তাদের মতই একজন ছিল আমার বন্ধু যার কোন বন্ধু নেই।
আমার সেই বন্ধুর বুকে চাপানো না বলা কষ্টগুলো দূর হবে কি করে? তাদের তো কোনো কাছের মানুষ নেই। তাই বন্ধুহীন দিনগুলোকে পাড়ি দিতেই ব্যস্ত তারা। কারণ তারা মনে করে বেঁচে থাকার মুহূর্তটাই শুধু কষ্টের, জীবন শেষে নতুন জীবনেই ফিরবে সব সুখ।

আমার বন্ধু সমীহা (১৭) একজন যৌন প্রতিবন্ধি (হিজড়া)। খিলগাঁওয়ের বাসাবো হিজড়াপল্লীতে বসবাস করত। আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। তার সঙ্গে সম্পর্কের সুবাধেই খুব কাছে থেকে দেখতে পেরেছি হিজড়াদের নানা দুর্ভোগ।

অন্যান্য মানুষের মতোই আমি হিজড়াদের খুবই ঘৃণা করতাম। সেই সঙ্গে ভয়তো ছিলোই।

একদিন খিলগাঁওয়ের রাস্তা দিয়ে হেটে বাসায় ফিরছিলাম (বাসাবো)। হঠাৎ কিছুদূরেই দু’টি রিকশার পরস্পরের ধাক্কায় একটি মেয়ে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায়। আমি তখন কাছে গিয়ে দেখি মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। তাকে একটা রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিছুক্ষণ পর তার জ্ঞান ফিরে। আমি যখন তাকে বললাম কেমন লাগছে এখন আপনার, তখন সে আমাকে বলে ‘ভালো’। কিন্তু তার কণ্ঠস্বরে আমার ভিতরে একটা বাড়ি খায়। তার অঙ্গভঙ্গি ও কণ্ঠস্বরে বুঝতে পারি সে হিজড়া। অবশ্য ততক্ষণে হিজড়াদের উপর ঘৃণা ও ভয়গুলো কেমন যেন অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপর থেকে সমীহার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব।

সমীহার সঙ্গে দেখা করারা জন্য প্রায়ই যেতাম বাসাবো হিজড়াপল্লীতে। একসময় তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে। তারাও আমাকে আপন ভেবে নিজেদের কষ্টের কথাগুলো বলতো খুব সহজেই।

আসলে হিজড়া নিয়ে হাজারো কল্পকাহিনী রয়েছে, রয়েছে নানা গল্প। কিন্তু কাছে থেকে দেখে মনে হয়েছে বিভিন্ন কুসংস্কারের কারণে হিজড়ারা সাধারণ মানুষের কাছে আসতে পারে না কিংবা মানুষ তাদের আপন করে নিতে চায় না। ওদের সম্পর্কে জানা থাকলে মানুষের সঙ্গে দূরত্বও সৃষ্টি হতো না।

মূলত এক্স (X) (X) এক্স ডিম্বানুর সমন্বয়ে কন্যা শিশু আর এক্স ওয়াই (X) (Y) থেকে জন্ম হয় ছেলে শিশু। ভ্রুণের পূর্ণতার স্তরগুলোতে ক্রোমোজোম প্যার্টানের প্রভাবে ছেলে শিশুর মধ্যে অণ্ডকোষ আর কন্যা শিশুর মধ্য ডিম্বকোষ জন্ম নেয়। অণ্ডকোষ থেকে নিসৃত হয় পুরুষ হরমোন এন্ড্রোজেন এবং ডিম্বকোষ থেকে নিসৃত হয় এস্ট্রোজেন। ভ্রুণের বিকাশকালে নিষিক্তকরণ ও বিভাজনের ফলে বেশ কিছু অস্বাভাবিক প্যাটার্নের সৃষ্টি হয় যেমন এক্স এক্স ওয়াই (X) (X) (Y) অথবা এক্স ওয়াই ওয়াই (X) (Y) (Y)। এর ফলে বিভিন্ন গঠনের হিজড়া শিশুর জন্ম হয়। বলছিলেন যৌন ও চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ জাবির।

হিজড়াদের সমস্যাটি অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের মতই একটি শারীরিক গঠনজনিত সমস্যা। কিন্তু প্রতিবন্ধকতার স্থানটি ভিন্ন। হিজড়াদের শারীরিক গঠন মূলত ৩ প্রকারের হয়ে থাকে- নারীদের সকল বৈশিষ্ট্য থাকলেও নারী যৌনাঙ্গ থাকে না, পুরুষের সকল বৈশিষ্ট্য থাকলেও পুরুষ যৌনাঙ্গ থাকে না এবং উভয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।

আবার শারীরিক ও মানসিক গঠনের উপর নির্ভর করে এদেরকে ৬ ভাগে ভাগ করা যায়। শারীরিক ভাবে পুরুষ কিন্তু মানসিকভাবে নারী বৈশিষ্ট্য এর অধিকারী হিজড়াদের বলা হয় অকুয়া, অন্য হিজড়াদের বলা হয় জেনানা, আর মানুষের হাতে নির্মষ্ক করা বা ক্যাসট্রেটেড পুরুষদের বলা হয় চিন্নি।

তবে হিজড়া বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মানো কোনও শিশু পরিণত বয়সে যাওয়ার আগে চিকিৎসা করা হয় তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাকে সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু শিশু অবস্থায় ব্যাপারটি অনেকেই বুঝতে না পারায় এ সমস্যা দেখা দেয়।

যখন একজন মানুষ বুঝতে পারে সে হিজড়া তখন সে পরিবার, সমাজসহ সকল জায়গায় অবহেলা আর অবজ্ঞার স্বীকার হয়। যখন একজন মানুষ এরকম অবহেলার স্বীকার হয় তখন সে তার দুঃখ শেয়ার করার জন্য তার মত যারা তাদের সঙ্গে মিশে যায়।

হিজড়া শিশু নারগিস বলেন, ‘আমি যে ভাই-বোনদের থেকে আলাদা তা বুঝতে পারি কৈশোরেই। আমার জন্য পরিবারের সবাইকে সমাজে নানা কথা শুনতে হতো। পরিবারও এক সময় আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করে। এ জন্য আত্মহত্যা করতে মন চাইতো, কিন্তু সাহস পাইনি। পরে এক সময় এ দলের সঙ্গে এসে মিশে যাই।’

তিনি আরও জানান, কারো হিজড়া বাচ্চা হলে তাকে নিজেদের দলে ভেড়ানোর জন্য চেষ্টা করা হয়। একসময় ঠিকই তাকে দলে আনা সম্ভব হয়। কারণ সমাজে কোনভাবেই একজন হিজড়ার পক্ষে একা চলা সম্ভব নয়।

এছাড়া কিছু ক্লিনিক আছে যারা টাকার বিনিময়ে পুরুষদের হিজড়ায় (ক্যাসট্রেটেড) পরিণত করে। বেঁচে থাকার তাগিদে রোজগারের আশায় একশ্রেণীর দরিদ্র পুরুষরা এটা করে থাকে।

হিজড়ারা মূলত তাদের আপনজন থেকে বিচ্ছিন্ন তাকে। বাবা-মা এর সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক থাকে না। দলের গুরুকেই তারা তাদের অভিভাবক মানে। তারা যখন দলে যোগ দেয় তখন গুরু তাদের আগের পোশাক ছাড়িয়ে শাড়ি পড়িয়ে দেয় এবং কপালে আশীর্বাদ স্বরূপ আঁচল ছুয়ে মন্ত্র পড়ে ফুঁ দেয়। যাকে তারা বলে রাখিবন্ধন। এরপর থেকে গুরুর অধীনেই চলে তাদের জীবনযাপন।

হিজড়াদের একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় বিয়ে হয়। হিজড়ারা ভগবানের সঙ্গে নিজের বিয়ে দেয়। এরপর সারাদিন তারা সংসার সংসার খেলা করে। সন্ধ্যা এলে তারা পুরো বিধবাবেশ গ্রহণের মাধ্যমে স্বামীর মৃত্যু শোক করে। তখন অঝোর ধারায় কাঁদতে থাকে তারা।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এরা এদের মতো জীবন-যাপন করে যা মুসলিমপ্রধান এদেশে জনগণ সহজে মেনে নেয় না। এমন কি ব্রিটিশ শাসনামলে হিজড়াদের যৌনতার বিরুদ্ধে আইন করা হয়েছে। ব্রিটিশ আইনে হিজড়াদের যৌনতাকে সডোমি হিসেবে চিহ্নিত করে এবং পেনালকোটে ৩৭৭ ধারাতে বলা হয়েছে, হিজড়াদের যৌনতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

উন্নত বিশ্বে হিজড়াদের অনেকেই সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হলেও আমাদের দেশে হিজড়াদের পেশা বলতে, শহর ও গ্রামের মহল্লায় ঘুরে নবাজাতককে নাচিয়ে কিছু অর্থ আদায় করা এবং বিভিন্ন দোকান-পাট এবং বাজারে গিয়ে টাকা তোলা। কিছু কিছু হিজড়া যৌন ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। তবে তাদের আয়ের সকল টাকা তারা তাদের গুরুর কাছে দিয়ে দেয়। গুরুই তাদের সকল ভরণপোষণ করেন। তবে যা টাকা তারা পায় তার বেশিরভাগ নিজেদের সাজগোজ করতেই চলে যায়।

হিজড়া চুমকি বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের কিছু ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করতো তা হলে ভালোভাবে খেয়েপরে বাঁচতাম। সরকার বিধবাদের ভাতা দেয়, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের টাকা দেয়, প্রতিবন্ধিদের সাহাস্য করে, ভাতা দেয়। আমরাও তো এক প্রকারের প্রতিবন্ধি। আমাদের কেন ভাতা দেওয়া হবে না?’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো নেই। আমাদের ওইভাবে ছেলে নাচিয়ে মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা নিতে আর ভালো লাগে না।’

চামেলি বলেন, ‘আমাদের এ পেশাতেও এখন ভাগ বসাতে শুরু করেছে এক শ্রেণীর পুরুষ। হিজড়া নয়, অথচ হিজড়া সেজে শাড়ি কাপড় পরে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ছেলে নাচিয়ে জোর করে টাকা কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মতোই ওরা আচরণ করে। সাধারণ মানুষ ওদের আচরণ দেখে বুঝতেই পারে না, ওরা হিজড়া নয়। ওদের সংসার আছে। ছেলেমেয়ে আছে, আছে বউ।’

এদিকে বাংলাদেশের সংবিধান রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতাপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত আওত্তাতীত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য লাভের অধিকার রয়েছে।’

সারা বিশ্বেই হিজড়ারা একটি কমিউনিটি রক্ষা করে চলে। ঢাকাতেও তার বিকল্প নয়। তবে বেশিরভাগ হিজড়াই বস্তিতে বসবাস করে। ঢাকাতে হিজড়ারা মূলত পাঁচটি দলে বিভক্ত। প্রতিটি দলের রয়েছে আলাদা আলাদা গুরু বা মা। ১. শ্যামপুর, ডেমড়া ও ফতুল্লা (গুরু- লায়লা হিজড়া); ২. শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর (গুরু- হামিদা হিজড়া); ৩. সাভার, ধামরাই, (গুরু- মনু হিজড়া); ৪. নয়াবাজার ও কোতোয়ালী (গুরু- সাধু হিজড়া) ৫. পুরোনো ঢাকা (গুরু- দিপালী হিজড়া)। এছাড়া রমনা পার্কে, কুড়িল বাড্ডা, খিলগাঁও, ভূঁইয়াপাড়াসহ অনেক এলাকাতেই তারা সংঘবদ্ধভাবে বসবাস করে। নিয়মানুযায়ী এক দলের হিজড়ারা অন্য এলাকায় গিয়ে তোলা তুলতে পারে না।

বাংলাদেশের হিজড়ারা বেশির ভাগ মুসলমান হলেও তারা হিন্দুদের কিছু রীতি নীতি মেনে চলে। তাই তাদের যদিও কবর দেওয়া হয়, কিন্তু তারা মনে করে তাদের আবার পূনঃজন্ম হবে। মৃত্যুর পর প্রত্যেক হিজড়াকে তারা বিছানার নিচে কবর দেওয়া হয়। এটাই তাদের রীতি। তবে স্থান সংকুলানের জন্য তাদের অন্যত্রও কবর দেওয়া হয়। তাদের কবরে প্রথমে ঢালা হয় লবন, তারপর লাশ ও ফুল, তারপর আবার লবন দেওয়া হয়। এটার মূল কারণ হল তাদের বিশ্বাস, এভাবে কবর দিলে আগের সকল পাপ ধুয়ে পরবর্তী জনমে তারা পূর্ণ নারী বা পুরুষ হিসেবে জন্মগ্রগণ করতে পারবে।

স্বাধীনতার ৩৮ বছর পর্যন্ত এ মৌলিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাদেরকে ভোট প্রয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হলেও অনেক হিজড়াদের অভিযোগ, তাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের সময় অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সংবিধানের মৌলিক অধিকার বিষয়ক ৩৯ অনুচ্ছেদের ২ ধারার ‘ক’ উপধারা মোতাবেক রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। এই বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হচ্ছে নিজের পছন্দানুযায়ী প্রতিনিধি নির্বাচন।

হিজড়াদের অধিকার রক্ষায় কোনও বিশেষ আইনি ব্যবস্থা নেই। প্রতি নিয়তই তারা বৈষম্যের শিকার। প্রতিকূল পরিবেশ ও অনুকূল সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাবে সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রান্তিক এই জনগোষ্ঠী।

সমাজের অসুস্থ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারা বাসস্থানের মতো অতি প্রয়োজনীয় একটি মৌলিক অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত। চরম অস্বাস্থ্যকর এলাকায় গাদাগাদি করে তারা বসবাস করে। ফলে অসুখ-বিসুখ তাদের নিত্যসঙ্গী।

চিকিৎসা, শিক্ষা, নিরাপত্তা, বিনোদন ও ভোটপ্রদানের অধিকার আদায়ে সহায়ক জনপ্রতিনিধিরাও তাদেরকে এড়িয়ে চলেন দায়িত্বহীনভাবে।

জাতীয় আদমশুমারি-২০১১ তে বরাবরের মতোই বাংলাদেশের হিজরা সম্প্রদায়কে গণনায় উপেক্ষা করা হয়েছিল বলে তাদের অভিযোগছিল কিন্তু তা গুরুত্ব পায়নি কারো কাছে।

হিজড়াদের পরিবারে সম্মানের সঙ্গে বসবাসের অধিকার, চাকরির অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার এবং তাদের ভালবাসা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু কাজের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় বলে অনেকেই অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে পড়ে। অথচ সমাজের স্বাভাবিক আচরণ পেলে এই হিজড়ারাই হতে পারতেন একেকজন স্বাবলম্বী মানুষ।

Spread the love
%d bloggers like this: