২০ টাকা চাঁদার জন্য ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র খুন!

প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় একটি অনুষ্ঠানের জন্য চাঁদা দেওয়াকে ঘিরে সৃষ্ট বিরোধে নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে দুই কিশোর ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। গত শুক্রবার রাতে কুমারগাতা ইউনিয়নের সত্রাশিয়া গ্রামে ওই স্কুলছাত্র খুন হয়।

নিহত স্কুলছাত্রের নাম ফজলুল হক (১৬)। সে মুক্তাগাছার গন্ধর্বপুর গ্রামের গোলাম রব্বানির ছেলে এবং উপজেলার রাম কিশোর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল।
পরিবারের অভিযোগ এবং পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৮ নভেম্বর সত্রাশিয়া গ্রামের মন্দিরে কালীপূজা উপলক্ষে স্থানীয় কিছু কিশোর ‘সাউন্ড সিস্টেম’ ভাড়া করে গান-বাজনার আয়োজন করে। এ উপলক্ষে স্থানীয় সব কিশোরের জন্য ২০ টাকা করে চাঁদা ধার্য করে ওই কিশোরেরা। কিশোরদের দুজন চাঁদার টাকা সংগ্রহ করে। স্কুলছাত্র ফজলুল হক প্রথমে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে সে চাঁদা দিলেও তা ওই দুই কিশোরকে না দিয়ে অপর এক কিশোরকে দেয়। এতে ওই দুই কিশোর খেপে গিয়ে ফজলুলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, শুক্রবার রাতে স্থানীয় কান্দাপাড়া মসজিদে মাহফিল হয়। ফজলুলও মাহফিলে যোগ দেয়। রাত ১০টার দিকে মাহফিল শেষে ফজলুলকে দেখতে পেয়ে ওই দুই কিশোর তাকে কাছের একটি স্কুলের পেছনে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে এক কিশোর ফজলুলের পিঠে ছুরিকাঘাত করে। এতে সে মাটিতে পড়ে চিৎকার দেয়। স্থানীয় লোকজন তার চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফজলুলকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর সময় পথেই সে মারা যায়। খবর পেয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় কিছু লোক জানান, ফজলুলকে ছুরিকাঘাত করে পালানোর সময় কয়েকজন গ্রামবাসী ছুরিসহ এক কিশোরকে ধরে ফেলেন। পরে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজনের চাপে তাকে ছেড়ে দেন তাঁরা।

মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহাম্মদ মোল্লাহ বলেন, ওই দুই কিশোর ছেলেটিকে ছুরিকাঘাত করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এক কিশোরকে আটকের পর স্থানীয় লোকজন তাকে ছেড়ে দিয়েছেন। বর্তমানে দুই পরিবারের সদস্যরাই পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত ফজলুল হকের পরিবার থেকে মামলা করা হয়নি।

Spread the love
%d bloggers like this: