পাখি নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম চলচ্চিত্র ‘প্যারাডাইজ নেস্ট’
সিনেমা এখন শুধু আর নায়ক নায়িকার কাহিনী আর ডায়লগের মতো গৎবাধা বিষয়ে আটকে নেই। প্রতিনিয়ত নানান ধরনের বিষয় বৈচিত্র আর অনুসঙ্গ যোগ হচ্ছে চলচ্চিত্রে। বিশেষ করে ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম’-এর বিষয় বৈচিত্র এখন দেখার মতো। পৃথিবীর স্বাধীন চলচ্চিত্রগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীন নির্মাতারাও গ্রহণ করছেন চলচ্চিত্রের নতুন এই ধারাটিকে। তাদের চলচ্চিত্রের বিষয় করছেন নতুন নতুন বিষয়। আর এবার তরুণ নির্মাতা আরিফ আহমেদ তার নিজের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের বিষয় করলেন পাখি। যা বাংলাদেশে এর আগে কোনো স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাকে করতে দেখা যায়নি।
মানুষের মতো পাখিরাও যে চলচ্চিত্রের বিষয় হতে পারে এই অভিনব কীর্তি ‘প্যারাডাইজ নেস্ট’-এর ভেতর দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করবেন নির্মাতা আরিফ আহমেদ। একটা বাসাকে কেন্দ্র করে পাখির যাপিত জীবন, বোধ, তার বেড়ে ওঠা, প্রকৃতির সঙ্গে স্ট্রাগল, প্রেম-ভালোবাসা, পাখি পাখিতে মমত্ব বোধ এমনকি ইকো সিস্টেমের শিকার হওয়ার মতো বিষয়গুলো দুর্দান্তভাবে চলচ্চিত্রটিতে দেখিয়েছেন নির্মাতা।
পাখি নিয়ে সিনেমা করার ভাবনা কিভাবে এলো এমন প্রশ্নে তরুণ নির্মাতা আরিফ আহমেদ বলেন, ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফির প্রতি এমনিতেই বছর কয়েক ধরে মারাত্মক ঝোঁক আমার। বাংলাদেশের এমন কোনো বন, সমুদ্র পাড় নেই যেখানে আমি ছবি তুলতে যাইনি। কিন্তু একবার কুষ্টিয়ার এক জঙ্গলে পাখির ছবি তুলতে গিয়ে পাখির জীবন যাপনের সঙ্গে নতুন করে আমার পরিচয় হয়। তখন মনে হয়, পৃথিবীতে কত ছোট ছোট প্রাণী রয়েছে যাদের জীবন রহস্য এক একটি ভিন্ন ধারার সিনেমার বিষয় হয়ে উঠতে পারে। তখন স্থির চিত্রের থেকে আমার মনে হলো যদি ভিডিওতে তাদের পুরো যাপনটা আমি ধরতে পারতাম! সেই ভাবনা থেকেই দিন রাত লেগে ছিলাম ‘প্যারাডাইজ নেস্ট’-এর প্রতি।
ছবিটি নিয়ে প্রাথমিক ভাবনা কি জানতে চাইলে ‘প্যারাডাইজ নেস্ট’ নির্মাতা জানান, ছবিটি এখন পোস্ট প্রোডাকশনে রয়েছে। কালার গ্রেডিং, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের কাজ হচ্ছে। পুরোপুরি শেষ হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। আর তারপরেই আমি প্রথমে বিশ্বের বিভিন্ন ফেস্টিভালগুলোতে মুভ করতে চাই। আমি বিশ্বের ওয়াইল্ডলাইফ সিনেমা মেকারদের দেখাতে চাই যে আমরা বাংলাদেশিরাও পারি। সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। এরপর ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছবিটির প্রদর্শনী করতে চাই। সবাই আমার ‘প্যারাডাইজ নেস্ট’-এর জন্য দোয়া করবেন।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির নাম ‘প্যারাডাইজ নেস্ট’ কেনো জানতে চাইলে নির্মাতা আরো জানান, আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি, একটা পাখির কাছে নিরাপদ বা ভরসার জায়গা হলো তার বাসা। মানে একটা পাখির কাছে ‘বাসা’ হলো তার স্বর্গ। আর সে কারণেই আমি আমার চলচ্চিত্রটির নামও রেখেছি ‘প্যারাডাইজ নেস্ট’।