গাজা ইস্যুতে ইসরাইলকে যে সতর্কবার্তা দিল তুরস্ক ও রাশিয়া

গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গণহত্যার পেছনে পশ্চিমা শক্তিগুলো ‘মূল অপরাধী’ বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
ইস্তাম্বুলে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আয়োজিত বিশাল এক বিক্ষোভ-সমাবেশে শনিবার এই কথা বলেছেন তিনি।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট এরদোগান তুর্কি জাতির ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের জন্য শনিবার বিকালে
‘গ্রেট প্যালেস্টাইন মিটিং’ শীর্ষক সমাবেশে দেওয়া ভাষণে এরদোগান তুরস্কের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, হামাস কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয়, বরং স্বাধীনতাকামী। আর ইসরাইল অবৈধ দখলদার।
এরদোগান আরও বলেন, আমরা সারা বিশ্বকে বলব, ইসরাইল যুদ্ধাপরাধী। আমরা এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। গাজায় গণহত্যার মূলহোতা পশ্চিমারা।পশ্চিমারা ইসরাইলের কাছে ঋণী, কিন্তু তুরস্ক ঋণী নয়।

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের অব্যাহত বোমা হামলার তীব্র সমালোচনা করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তিনি বলেন গাজায় ইসরাইলের বোমাবর্ষণ আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এতে বিপর্যয় সৃষ্টির ঝুঁকি রয়েছে, যা কয়েক দশক ধরে স্থায়ী হতে পারে।
শনিবার বেলারুশের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বেলটাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন লাভরভ। ইসরাইলের বিরুদ্ধে রাশিয়ার এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে লাভরভের মন্তব্যকে।
তিনি বলেন, আমরা সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানাই। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করে সন্ত্রাসবাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর সঙ্গে আমরা দ্বিমত পোষণ করি। বেসামরিক নাগরিক, জিম্মি লোকজন রয়েছে জানার পরও নির্বিচার বলপ্রয়োগ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিষ্কার লঙ্ঘন।
‘অবরোধের মধ্যে থাকা জনগণকে বাঁচানোর জন্য অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং সেখানে মানবিক কর্মসূচি ঘোষণা করা দরকার।’
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারীগোষ্ঠী হামাসের ইসরাইলে আকস্মিক হামলার পাল্টায় গাজাজুড়ে বোমা হামলা শুরু করে ইসরাইল। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধে ইসরাইলের হামলায় ৮ হাজার জনের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে।
যুদ্ধ শুরুর পর পরই সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের ঘোষণা দিয়ে গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানির সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। আর ইসরাইলে হামাসের হামলায় মারা গেছেন অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন। ইসরাইলের টানা হামলার কারণে গাজার প্রায় ১৪ লাখ মানুষ ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

Spread the love
%d bloggers like this: