ইসরায়েলে ভয়াবহ ড্রোন হামলা হিজবুল্লাহর, আরও বড় হামলার হুশিয়ারি
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের ওপর আরও হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে। গতকাল রোববার ইসরায়েলের হাইফা এলাকার কাছে একটি ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা হওয়ার পর এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, ইসরায়েল যদি লেবাননে হামলা চালিয়ে যেতে থাকে, তবে এর জবাবে দেশটিতে আরও হামলা চালানো হবে।
হিজবুল্লাহ আরও বলেছে, তারা একই সময়ে আকরে ও হাইফা অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন উড়িয়েছে। এর মধ্যে কিছু ড্রোন প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। ড্রোনগুলো ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা রাডারগুলোকে ফাঁকি দিতে পেরেছে। এগুলো রাডারে শনাক্ত হয়নি এবং তা হাইফার দক্ষিণে বেনইয়ামিনা প্রশিক্ষণকেন্দ্রে আঘাত করতে সক্ষম হয়। যেসব কক্ষে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও সেনা উপস্থিত ছিল।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, হামলায় চার সেনা নিহত হয়েছেন। এটি ছিল গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েলি কোনো ঘাঁটিতে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা। লেবাননে হিজবুল্লাহর ওপর হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল।
গতকাল ইসরায়েলের ঘাঁটিতে হামলার পর হিজবুল্লাহ হুঁশিয়ার করে বলেছে, লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যদি হামলা চালিয়ে যেতে থাকে, তবে তাদের জন্য জবাব হিসেবে যা অপেক্ষা করছে, সে তুলনায় এ হামলা কিছুই নয়।
ইরান–সমর্থিত হিজবুল্লাহ বলেছে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ব্যস্ত রাখার লক্ষ্যে হাইফার উত্তরাঞ্চলে নাহারিয়া ও আকরে এলাকায় বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তারা। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি একে ‘মিশ্র অভিযান’ আখ্যা দিয়েছে।
বেনইয়ামিনায় হামলা চালানোর দাবি করে হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা হাইফা এলাকার দক্ষিণে সেনাবাহিনীর একটি ‘রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্বাসন ঘাঁটিতে’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
লেবানন থেকে ইসরায়েলে দুটি ড্রোন উড়ে আসার ঘটনার দুই দিন পর এ হামলা হলো। ওই ড্রোনগুলো ইসরায়েলের আকাশসীমায় প্রবেশ করার পর দেশটির মধ্যাঞ্চলে বিমান হামলাজনিত সতর্কসংকেত বাজানো হয়েছিল। এ ঘটনায় তেল আবিবের উত্তর দিকের অন্তত একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এক বছরের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলে নিয়মিত রকেট ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। তবে গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে জোরেশোরে লড়াই শুরু হওয়ার পর হামলার মাত্রা বেড়েছে।আয়রন ডোম ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সাহায্যে বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্রই প্রতিহত করার দাবি করেছে ইসরায়েল। হামলা কিংবা ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষের কারণে কিছু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
লেবাননের সরকারি হিসাবে দেখা গেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির সংঘাতকে কেন্দ্র করে ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখের বেশি মানুষ।