গাজীপুরে কলেজছাত্র সোহাগ হত্যা: ৯ যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে প্রাণদণ্ড

গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরে চাঞ্চল্যকর শাহাদাত হোসেন সোহাগ হত্যা মামলায় ৯ যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক ফজলে এলাহী ভূইয়া এ রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া মামলার অন্য একটি ধারায় প্রত্যেক আসামিকে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা করে জরিমানা এবং আরো একটি ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। সোহাগ গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন গাজীপুর শহরের নিয়ামত সড়ক এলাকার শামসুল হকের ছেলে সেলিম ও একই এলাকার আব্দুস সোবাহানের ছেলে আসাদুল ইসলাম, উত্তর ছায়াবীথি এলাকার নাজমুল হকের ছেলে জহিরুল ইসলাম ওরফে জাকির হোসেন ওরফে ঝন্টু, বিলাশপুর এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে জুয়েল, শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার বাঘেরভিটা এলাকার বাক্কা মিয়ার ছেলে বাক্কা সুমন, দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকার মো. আবদুল মালেকের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম ওরফে প্রিতম ওরফে প্রিতু ওরফে ইতু, রথখোলা এলাকার সিদ্দিকের ছেলে আরিফ, সামন্তপুর এলাকার লেহাজ উদ্দিনের ছেলে মো. হানিফ ও উত্তর বিলাশপুর এলাকার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে রিপন আহমেদ জুয়েল। তাঁদের মধ্যে সেলিম, হানিফ, জুয়েল ও আসাদুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় বাকি পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

গাজীপুর আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আতাউর রহমান জানান, সোহাগের বন্ধু বিহন কায়সারের স্ত্রী আঁখিকে মোবাইল ফোনে উত্ত্যক্ত করতেন সেলিম। এ ব্যাপারে সেলিমের সঙ্গে কথা বলার জন্য বিহন কায়সার ২০১০ সালের ৮ জানুয়ারি বিকেলে ফোন করে সোহাগকে শহরের রাজবাড়ি মাঠে যেতে বলেন। বিকেলে সোহাগ তাঁর আরেক বন্ধু নাহিদকে সঙ্গে নিয়ে ওই মাঠে যান।
সেখানে একটি চটপটির দোকানে বিহন কায়সার, তাঁর স্ত্রী আঁখি, বিহনের আরেক বন্ধু হানিফ ও আসামিদের দেখতে পান। সোহাগ ভবিষ্যতে আর উত্ত্যক্ত না করতে সেলিমকে অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে তর্ক বাধে। বিহন সেলিমকে থাপ্পড় দিলে আসামিরা ছুরি, কিরিচ ও ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে সোহাগ, বিহন, আঁখি ও হানিফের ওপর হামলা চালান।

এ সময় তাঁরা ছুরি দিয়ে সোহাগের পেটে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে পালিয়ে যান। সোহাগকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সেলিমের নেতৃত্বে শহরের আজিম উদ্দীন কলেজের সামনে আসামিরা তাঁদের ওপর আবারও হামলা চালান। তাঁরা সোহাগকে বুকে-পিঠে ছুরিকাঘাত করেন। পরে সোহাগকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সোহাগের বাবা আবুল হাসেম সুফি বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন।

Spread the love
%d bloggers like this: