বঙ্গবন্ধু পরিবারের ধর্মীয় ঐতিহ্য

মাওলানা কাসেম শরীফ :
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক সম্ভ্রান্ত ধার্মিক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন। তাঁর বংশপরম্পরা হলো—শেখ মুজিবুর রহমান বিন শেখ লুত্ফুর রহমান বিন শেখ আবদুল হামিদ বিন শেখ তাজ মাহমুদ বিন শেখ মাহমুদ ওরফে তেকড়ী শেখ বিন শেখ জহিরুদ্দীন বিন দরবেশ শেখ আউয়াল।

শেখ আউয়াল হজরত বায়জিদ বোস্তামি (রহ.)-এর সঙ্গে ১৪৬৩ খ্রিস্টাব্দে ইসলাম প্রচারের জন্য বঙ্গীয় এলাকায় আগমন করেছেন। (অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু ও ড. মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, ইসলাম ও বঙ্গবন্ধু, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা, ১৯৯৮, পৃষ্ঠা ১৭)

ধর্ম ও ধার্মিকতা বঙ্গবন্ধু পরিবারের ঐতিহ্য। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে এ বিষয়ে ইঙ্গিত আছে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার জন্ম হয় টুঙ্গিপাড়া শেখ বংশে। শেখ বোরহানউদ্দিন নামে এক ধার্মিক পুরুষ এই বংশের গোড়াপত্তন করেছেন বহুদিন পূর্বে। ’ (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, অসমাপ্ত আত্মজীবনী, দ্বিতীয় মুদ্রণ, সেপ্টেম্বর ২০১২, দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, ঢাকা, পৃষ্ঠা ৩)

ইসলামের ইতিহাসে শেখ বা শায়েখ শব্দের গুরুত্ব

বঙ্গবন্ধু পরিবারের বংশীয় উপাধি হলো ‘শেখ’। ‘শেখ’ শব্দটি আরবি। এটি এসেছে আরবি ‘শায়খ’ থেকে। এর স্ত্রীলিঙ্গ হলো ‘শায়খা’।
আর বহুবচন হলো ‘শুয়ুখুন’।

আরবি ভাষায় বয়োবৃদ্ধ সম্মানিত ব্যক্তিকে ‘শেখ’ বলা হয়। আরবি ভাষার শ্রেষ্ঠতম অভিধান লিসানুল আরবের মতে, শেখ বলা হয় ওই ব্যক্তিকে, যাঁর চুলে শুভ্রতা প্রকাশ পেয়েছে এবং যাঁর দেহে বার্ধক্যের চিহ্ন ফুটে উঠেছে। (ইবনু মানজুর, লিসানুল আরব : ৩১/৩-৩৩)

পবিত্র কোরআনে তিন জায়গায় শেখ বা ‘শায়খ’ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন—সুরা হুদের ৭২ নম্বর আয়াতে, সুরা ইউসুফের ৭৮ নম্বর আয়াতে, সুরা কাসাসের ২৩ নম্বর আয়াতে। আর এক জায়গায় ‘শায়খ’ শব্দের বহুবচন ‘শুয়ুখুন’ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি ব্যবহৃত হয়েছে সুরা মুমিনের ৬৭ নম্বর আয়াতে।

ইসলামের ইতিহাসে শেখ বা শায়েখ শব্দটি খুবই মর্যাদাপূর্ণ। বলা যায়, ইসলামের সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ উপাধিগুলোর অন্যতম হলো শেখ বা শায়েখ। ইসলামের প্রথম দুই খলিফাকে একসঙ্গে ‘শায়খাইন’ বা দুই শায়খ বলা হয়ে থাকে। হানাফি মাজহাবের দুই ইমাম—ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-কে একসঙ্গে ‘শায়খাইন’ বা দুই শায়খ বলা হয়ে থাকে। বিশুদ্ধ হাদিসের প্রধান দুটি গ্রন্থ বুখারি ও মুসলিম শরিফের দুই লেখককে একসঙ্গে বলা হয় ‘শায়খাইন’। এ ছাড়া যুগে যুগে যেসব হাদিসবেত্তা হাদিস চর্চায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের ‘শায়খ’ বলা হয়। এ শব্দ থেকেই এসেছে ‘শায়খুল হাদিস’ উপাধি। আর এ শব্দ থেকেই এসেছে শেখ শব্দটি। এটি আরবীয় পরিভাষা। আর কোনো ভাষায় এ পরিভাষার ব্যবহার নেই।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের ধর্মীয় ঐতিহ্য বোঝানোর জন্য তাঁদের এই বংশীয় উপাধিই যথেষ্ট। এ উপাধির মাধ্যমেই বোঝা যায়, এ পরিবারের শত শত বছরের ইসলাম ধর্মীয় ঐতিহ্য আছে।

তবে হ্যাঁ, আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি অনুসারে কোনো শব্দ যখন বংশীয় উপাধি হয়ে যায়, তখন সেটা নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে সবার জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন—চৌধুরী শব্দটি নারী-পুরুষ সবার জন্য ব্যবহৃত হয়। সে হিসেবে ‘শেখ’ শব্দটি পুরুষবাচক হলেও এটি বংশীয় হওয়ায় নারী-পুরুষ সবার জন্য ব্যবহৃত হয়। আরবি ভাষার আরেকটি নিয়ম হলো, কোনো শব্দ যখন কারো নামের অংশ (আলম) হয়ে যায়, তখন তা নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে সবার জন্য ব্যবহৃত হয়। এভাবেই বংশীয় উপাধিযুক্ত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা—শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবার নাম রাখা হয়েছে আরবিতে। বঙ্গবন্ধুর পিতার নাম আরবি—শেখ লুত্ফুর রহমান। তাঁর স্ত্রীর নাম আরবি—বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। আরবিতে নাম রাখা ইসলামের দৃষ্টিতে বাধ্যতামূলক নয়। তার পরও বঙ্গবন্ধু তাঁর সন্তানদের নাম রেখেছেন আরবিতে। এ ক্ষেত্রে মুসলিম সংস্কৃতির অনুসরণ করা হয়েছে। তাঁর পাঁচ সন্তানের নাম হলো—শেখ হাসিনা, রেহানা, কামাল, জামাল ও রাসেল। হাসিনা শব্দের অর্থ রূপবতী, চিত্তাকর্ষক সৌন্দর্যের অধিকারী। রেহানা বা রায়হানা জান্নাতের একটি ফুলের নাম। একজন নারী সাহাবির নামও রায়হানা। রেহানা অর্থ সুগন্ধি।

কামাল অর্থ পরিপূর্ণ ও মহৎ গুণের অধিকারী। জামাল অর্থ সৌন্দর্য ও আভিজাত্য। আর রাসেল অর্থ পথনির্দেশক।

বঙ্গবন্ধুর পিতার ধর্মানুরাগ

বঙ্গবন্ধুর পিতার নাম শেখ লুত্ফুর রহমান। লুত্ফুর রহমান অর্থ দয়ালু আল্লাহর অনুগ্রহ।

বঙ্গবন্ধুর পিতা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রচণ্ড ধর্মপরায়ণ। তিনি আপাদমস্তক খাঁটি মুসলমান ছিলেন। তাঁর মুখমণ্ডলে মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসারে ঘন দাড়ি ছিল। তিনি মুসলিম সংস্কৃতি অনুযায়ী সব সময় টুপি-পাঞ্জাবি পরিধান করতেন। তাঁর ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া না গেলেও একটি ঘটনা থেকে তাঁর ধর্মানুরাগের প্রমাণ মেলে।

১৯৭২ সাল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। সে সময় তথ্য মন্ত্রণালয় দেশের অনেক পত্রিকার সঙ্গে মাসিক মদীনার প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রায় দুই মাস মাসিক মদীনা পত্রিকা বন্ধ। এই সময় মাসিক মদীনার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রহ.)-এর কাছে ফরিদপুর টুঙ্গিপাড়া থেকে একটি চিঠি আসে। পাঠিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুত্ফুর রহমান। চিঠির বিবরণ নিম্নরূপ :

‘শ্রদ্ধেয় সম্পাদক সাহেব,

সালাম নিবেন। আশা করি কুশলেই আছেন। পর কথা হলো, আমি মাসিক মদীনার একজন নিয়মিত গ্রাহক। গত দুমাস ধরে মদীনা পত্রিকা আমার নামে আসছে না। তিন মাসের বকেয়া বাকি ছিল। তাই হয়তো আপনি পত্রিকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। আমি আমার ছেলে মুজিবকে চিঠি লিখে বলে দিব সে যেন আপনার টাকা পরিশোধ করে দেয়। আমি বৃদ্ধ মানুষ। প্রিয় মদীনা পত্রিকা ছাড়া সময় কাটানো অনেক কষ্টকর। আশা করি আগামী মাস থেকে মদীনা পড়তে পারব। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমিও আপনার জন্য দোয়া করি।
ইতি
শেখ লুত্ফুর রহমান
টুঙ্গিপাড়া, ফরিদপুর। ’

মাওলানা মুহিউদ্দীন খান এ চিঠি পড়েই বুঝতে পেরেছেন, কে এই চিঠি পাঠিয়েছেন। তত্ক্ষণাৎ তিনি চিঠি নিয়ে সোজা বঙ্গভবনে চলে গেলেন। তিনি শেরওয়ানির পকেট থেকে বঙ্গবন্ধুর পিতার পাঠানো চিঠিখানা বের করে বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দেন। বাবার হাতের পরিচিত লেখা দেখেই তিনি এক নিঃশ্বাসে চিঠিটা পড়ে ফেললেন। পড়তে পড়তে বঙ্গবন্ধুর দুই চোখ পানিতে ভরে যায়। মাওলানা মুহিউদ্দীন খানকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বললেন, ‘তুই আমার কাছে আরো আগে আসলি না কেন? হারামজাদাদের তো ইসলামী কোনো পত্রিকা বন্ধ করতে বলিনি। আমার বাবা তো আর দুনিয়াতে নাই। গত কয়েক দিন আগে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। ’

বঙ্গবন্ধু পরে তথ্যসচিবকে ফোন করে বকাঝকা করেন। তারপর তিনি মাসিক মদীনার ডিকলারেশন চালু করে দিতে নির্দেশ দেন। এরপর বঙ্গবন্ধু হাত ধরে মাওলানা মুহিউদ্দীন খানকে গাড়িতে তুলে বাসায় নিয়ে যান। সেখানে সঙ্গে বসিয়ে দুপুরের খাবার খাইয়ে তারপর বিদায় দেন। (আস সিরাজ, সাপ্তাহিক মুসলিম জাহান, মার্চ ২০০৯, মুহিউদ্দীন খান সংখ্যা)

উল্লেখ্য, এ চিঠির কপি এখনো মাসিক মদীনার অফিসে সংরক্ষিত আছে।

বঙ্গমাতার ধর্মানুরাগ

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে বঙ্গমাতার কথা স্বাভাবিকভাবেই এসে যায়। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বহু কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি দৃশ্যমান না হয়েও বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ছিলেন প্রচারবিমুখ। ফলে তাঁকে নিয়ে পর্যাপ্ত আলোচনা বাংলাদেশে হয়নি। আরো আশ্চর্য বিষয় হলো, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনাচার ও ধর্মপরায়ণতা নিয়ে মোটেও আলোচনা হয়নি, আলোচনা হয় না। কেন, তা জানি না। আমরা মনে করি, তাঁর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন খাঁটি মুসলিম নারীদের জন্য রোল মডেল। মাত্র তিন বছর বয়সে তিনি মাতৃহারা হন। কেন জানি পৃথিবীর বিখ্যাত বহু মানুষের জীবনে দেখা যায়, ছোটবেলায়ই তাঁরা মাতৃ বা পিতৃহারা হন। ইসলামে এতিমদের লালন-পালনের ব্যাপারে অত্যন্ত তাগিদ রয়েছে। এ বিষয়ে কোরআন ও হাদিসে বহু নির্দেশনা এসেছে। কোরআনের ভাষ্য মতে, এতিমদের লালন-পালনের একটি দিক হলো তাঁদের বিয়ের ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যদি আশঙ্কা করো যে এতিম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে বিয়ে করবে নারীদের মধ্য থেকে, যাকে তোমাদের ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে তাদের মধ্যে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, তাহলে কেবল একজনকে বিয়ে করবে…। ’ (সুরা : আন নিসা, আয়াত : ৩)

এ আয়াতের মূল কথা হলো, সুবিচার ও যথাযথ অধিকার আদায় করে যদি এতিম মেয়েদের বিয়ে করা যায়, তাহলে তাদের বিয়ে করে নেবে। আর যদি তাদের ওপর অবিচার করার আশঙ্কা থাকে, তাহলে অন্য নারীদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা বিয়ে করবে।

কোরআনের এ নির্দেশনার বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পাই বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবনে। মাত্র তিন বছর বয়সে মুরব্বিদের সিদ্ধান্তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

তিনি তাঁর গোটা সংসারজীবন পার করেছেন খাঁটি মুসলিম নারী হিসেবে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকলেও দুটি বিষয় আলোচনা করলে আমাদের দাবির সত্যতা প্রমাণিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গমাতার সংসারজীবন সম্পর্কে লিখেছেন—‘সংসারটা কিভাবে চলবে সম্পূর্ণভাবে তিনি নিজে করতেন। কোনো দিন জীবনে কোনো প্রয়োজনে আমার বাবাকে বিরক্ত করেননি। মেয়েদের অনেক আকাঙ্ক্ষা থাকে স্বামীদের কাছ থেকে পাওয়ার। শাড়ি, গয়না, বাড়ি, গাড়ি কত কিছু। এত কষ্ট তিনি করেছেন জীবনে কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলেননি। চাননি। ’ (শেখ হাসিনার কলাম, শেখ ফজিলাতুন্নেছা—আমার মা, বিজয় সরণি মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৭, জেলা প্রশাসন, ঢাকা, পৃষ্ঠা ২৭)

বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব খুবই ধার্মিক নারী ছিলেন। শুধু নামাজ-রোজাই নয়, বাস্তবজীবনে তিনি পুরোপুরি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতেন। তিনি ছিলেন পর্দানশিন নারী। তাঁর সম্পর্কে শেখ হাসিনা লিখেছেন, ‘আমাদের বসার ঘরটার নিচে যে ঘরটা আছে ওখানে আগের দিনে এ রকম হতো যে ড্রয়িংরুম, এরপর ডাইনিং রুম, মাঝখানে একটা কাপড়ের পর্দা। মা যখন পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা আসতেন পর্দাটা টেনে ভেতরে বসে কথা বলতেন, বলতেন, আমি পর্দা করি, আমাদের বলতেন ওদের সঙ্গে থাকব না, দেখা করব কেন। ’ (শেখ হাসিনার কলাম, শেখ ফজিলাতুন্নেছা—আমার মা, পৃষ্ঠা ২৯)

বঙ্গবন্ধুর গৃহে ধর্মীয় শিক্ষা ও শিক্ষক

ঐতিহ্যগতভাবে বঙ্গবন্ধু পরিবারে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পিতা সম্পর্কে লিখেছেন, ‘আমাদের বাড়ির দক্ষিণ-পশ্চিম দিক ঘেঁষে একটা সরু খাল চলে গেছে, যে খাল মধুমতী ও বাইগার নদীর সংযোগ রক্ষা করে। এই খালের পাড়েই ছিল বড় কাছারি ঘর। আর এই কাছারি ঘরের পাশে মাস্টার, পণ্ডিত ও মৌলভি সাহেবদের থাকার ঘর ছিল। তাঁরা গৃহশিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন এবং তাঁদের কাছে আমার পিতা আরবি, বাংলা, ইংরেজি ও অঙ্ক শিখতেন। ’ (শেখ হাসিনা, শেখ মুজিব আমার পিতা, অগ্রপথিক, মহান স্বাধীনতা ও শোক দিবস সংখ্যা, ঢাকা : ইফাবা-১৯৯৭)

এমনকি বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও তাঁর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে একজন হাফেজ ছিলেন। বলা হয়ে থাকে, বঙ্গবন্ধু পরিবারের লেখাপড়া শুরু হতো আলিফ-বা-তা-ছা দিয়ে। প্রয়াত কারি উবায়দুল্লাহকে বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধু প্রায়ই তাঁদের বাসায় আমন্ত্রণ জানাতেন। ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা তাঁর মাধ্যমে উপকৃত হতেন। (সূত্র : প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবু তৈয়ব সাহেবের দেওয়া তথ্য)

লেখক : সাংবাদিক

[email protected]

Spread the love
%d bloggers like this: