কি থাকছে জামায়াতের সংস্কার প্রস্তাবে?

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ‘ভারসাম্য’ আনার পাশাপাশি সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।

নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অর্থবহ করার জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের ‘ব্যাপক সংস্কারের’ পক্ষে মত দিয়ে জামায়াতে ইসলামী বলেছে, সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলে তারা মনে করেন না।

নির্বাচন ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্র পরিচালনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য ৪১টি প্রস্তাব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে তুলে ধরেছে দলটি।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে জামায়াতের আমীর শফিকুর রহমানের পক্ষে দলটির নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন।

সংবিধান সংস্কার করে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ‘ভারসাম্য’ আনার পাশাপাশি একই ব্যক্তির পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকার সুযোগ বন্ধ করার সুপারিশ করা হয় সেখানে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা চালু করা, সংবিধানে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে সন্নিবেশ করা এবং রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের নিয়ম বাতিল করার প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াত।

এছাড়া আওয়ামী লীগের সময়ে অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে করা সব চুক্তি পর্যালোচনা করা; পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিধান করা; পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘ধর্মীয় মূল্যবোধবিরোধী’ উপাদান বাদ দেওয়া; সকল শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে মহানবীর (সা.) জীবনী সংযোজন করা; নাটক, সিনেমাসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানগুলো ‘অশ্লীলতামুক্ত’ করা; প্রাণীর মূর্তিনির্ভর ভাস্কর্য নির্মাণ না করা এবং বিতর্কিত সকল বই বাতিল ও প্রকাশনা বন্ধ করার সুপারিশ রওয়েছে জামায়াতের প্রস্তাবের মধ্যে।

সরকারি চাকরিতে যোগদানের বয়সসীমা দুই বছরের জন্য বাড়িয়ে ৩৫ বছর করা এবং পরে তা আবার ৩২ এ ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি অবসরের সময়সীমা ৬২ বছর করার প্রস্তাবও দলটি দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে ৪২টি প্রস্তাবের বিস্তারিত না তুলে ধরে সংক্ষেপে কেবল ১০টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। দেশের অর্থনীতি বা ক্ষমতাচ্যুৎ আওয়ামী লীগের নির্বাচনে আসা বা না আসার বিষয়টি কীভাবে সুরাহা হবে সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়নি। তবে বিস্তারিত প্রস্তাববে ‘অনেককিছুই’ আছে বলে জানিয়েছেন দলটির আমীর।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, আ না ম শামসুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম মাছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাইফুল আলম খান মিলন, হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, নূরুল ইসলাম বুলবুল, মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও মোবারক হোসাইন উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

যা আছে প্রস্তাবে

জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ‘দেড় সহস্রাধিক’ প্রাণের বিনিময়ে ‘স্বৈরশাসক’ শেখ হাসিনার পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব হল ‘স্বল্পতম সময়ের মধ্যে মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে’ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান প্রধান খাতে সংস্কারের যেসব প্রস্তাব জামায়াত দিয়েছে, সেগুলো হল–।

আইন ও বিচার

● উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের জন্য সুষ্ঠু ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

● বিচার বিভাগ থেকে দ্বৈত শাসন দূর করতে হবে।

● বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

● আইন মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

● ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে বিদ্যমান আইগুলোর প্রয়োজনীয় সংশোধনী ও ‘গণমানুষের মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ’ আইন করতে হবে।

● ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ এবং সকল ‘কালো আইন’ বাতিল করতে হবে।

● বিচারের দীর্ঘসূত্রতা কমাতে বিভাগীয় পর্যায়ে হাই কোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

● নিম্ন আদালতের যথাযথ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য পৃথক বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করতে হবে।

● সকল ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।

● দেওয়ানি মামলার জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছর এবং ফৌজদারি মামলাসমূহ সর্বোচ্চ ৩ বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বিধান করতে হবে।

সংসদ

● সংসদের প্রধান বিরোধীদল থেকে একজন ডেপুটি স্পিকার মনোনীত করতে হবে।

● সংসদীয় বিরোধী দলীয় নেতার নেতৃত্বে ছায়া মন্ত্রিসভা গঠনের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

● সংসদে বিরোধী দলীয় সদস্যদের পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।

নির্বাচন

● জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

● সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে স্থায়ীভাবে সন্নিবেশিত করতে হবে।

● নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন দেশে প্রত্যাখ্যাত ইভিএম ভোটিং ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।

● কোনো সরকারি চাকরিজীবী তাদের চাকরি ছাড়ার কমপক্ষে ৩ বছরের মধ্যে কোনো ধরনের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

● স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে।

● অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ২০০৮ সালে প্রবর্তিত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা বাতিল করতে হবে।

● নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠিত হবে।

● জাতীয় সংসদ নির্বাচন একাধিক দিনে অনুষ্ঠিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

● এনআইডি ব্যবস্থাপনা নির্বাচন কমিশনের অধীনে আনতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা

ক) পুলিশ বাহিনীর সংস্কার

● ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ সরকার প্রণীত পুলিশ আইন পরিবর্তন এবং পুলিশের জন্য একটি পলিসি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে।

● পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং চাকরিচ্যুতির জন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে।

● নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং চাকরিচ্যুতির ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যক্তির সুপারিশের সুযোগ রাখা যাবে না তথা সর্বপ্রকার দলীয় ও ব্যক্তিগত প্রভাব বা হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।

● পুলিশ ট্রেনিং ম্যানুয়ালের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা ও নৈতিক অনুশাসন অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

● পুলিশের মধ্যে মারণাস্ত্রের ব্যবহার বাতিল করতে হবে।

● রিমান্ড চলাকালে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আসামিপক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতি এবং নারী আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের অভিভাবকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

● বিচার বিভাগীয় সদস্যদের দিয়ে পুলিশ ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান থাকতে হবে।

● পুলিশের ডিউটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা উন্নত করতে হবে।

● ‘পুলিশ আইন’ পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জনের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করতে হবে।

খ) র‌্যাব সংস্কার

● র‌্যাব ও অন্যান্য বিশেষায়িত বাহিনীর প্রতি জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে।

● গত সাড়ে ১৫ বছর যারা র‌্যাবে কাজ করেছেন, তাদেরকে স্ব স্ব বাহিনীতে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং তাদের পুনরায় র‌্যাবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

● বিচারবহির্ভূত সকল প্রকার হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।

● র‌্যাবের সামগ্রিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য সেল গঠন করতে হবে। কোনো র‌্যাব সদস্য আইনবহির্ভূত কোনো কাজে জড়িত হলে এই সেল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করবে।

● মিডিয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন ও অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে।

গ) জনপ্রশাসন সংস্কার

● জনবল নিয়োগ, বদলি, পদায়নে তদবির, সুপারিশ ও দলীয় আনুগত্যের পরিবর্তে যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততাকে প্রাধান্য দিতে হবে।

● যে কোনো চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে নিয়োগ পর্যন্ত সময়ক্ষেপণ না করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

● সরকারি চাকরিতে আবেদন বিনামূল্যে করতে হবে।

● চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আগামী ২ বছরের জন্য ৩৫ বছর ও পরবর্তী বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩৩ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।

● চাকরির আবেদনে সকল ক্ষেত্রে বয়সসীমার বৈষম্য নিরসন করতে হবে।

● সকল সরকারি দপ্তরে দুর্নীতি নিরোধকল্পে বিশেষ ব্যবস্থা তৈরি করা যাতে করে কেউ দুর্নীতি করার সুযোগ না পায়। এ জন্য প্রয়োজনীয় মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

● চাকরিতে বিরাজমান আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে।

● বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে সরকারি চাকরিতে যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও দলীয় বিবেচনায় চাকরি পেয়েছে তাদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

দুর্নীতি

● দুর্নীতি দমন কমিশনে পরীক্ষিত সৎ, ন্যায়পরায়ণ, দক্ষ ও যোগ্য লোক নিয়োগ দিতে হবে।

● রাষ্ট্রের সকল সেক্টরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

● দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার স্বাধীনতা দিতে হবে।

● বিগত সরকারের আমলে দেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার উপযুক্ত বিধান প্রণয়ন ও তা কার্যকর করার পদক্ষেপ নিতে হবে।

● মন্ত্রণালয়ভিত্তিক দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে।

● দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনসংস্কার, জনবল ও পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে।

● রাষ্ট্রীয় ও জনগণের সম্পদ অবৈধভাবে ভোগ দখলকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুস্পষ্ট আইন প্রণয়ন করতে হবে।

সংবিধান সংস্কার

● রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখার বিধান সংযুক্ত করতে হবে।

● একই ব্যক্তি পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না।

শিক্ষা ও সংস্কৃতি

ক) শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাব

● ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিকে উচ্চমাধ্যমিক হিসেবে বলবৎ রাখতে হবে। অষ্টম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করে পূর্বের পরীক্ষা পদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে হবে।

● পাঠ্যপুস্তকে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরতে হবে।

● সকল শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ধর্মীয় মূল্যবোধবিরোধী উপাদান বাদ দিতে হবে।

● সকল শ্রেণিতে নবী করিম (সা.) এর জীবনীসহ মহামানবদের জীবনী সংবলিত প্রবন্ধ সংযোজন করতে হবে।

● স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিদ্যমান স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলোকে সরকারিকরণ করতে হবে।

● প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে কামিল মাদরাসাকে সরকারিকরণ করতে হবে।

● কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষার মূলধারায় যুক্ত করতে হবে।

● Department of Higher Education নামে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে।

● শিক্ষা সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত শিক্ষা কমিশনের সকল ধারা তথা সাধারণ, আলিয়া, কওমীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

খ) সংস্কৃতি সংস্কার

● জাতির ঐতিহাসিক আন্দোলন-সংগ্রাম ও মূল্যবোধের আলোকে বিভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে।

● জাতির ঐতিহাসিক দিনগুলোকে স্মরণীয় করার লক্ষ্যে বিশেষ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তা পালনের ব্যবস্থা করতে হবে।

● নাটক, সিনেমাসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানগুলো অশ্লীলতামুক্ত করতে হবে। নাটক, সিনেমা ও বিভিন্ন কন্টেন্টে বিভিন্ন ধর্ম, বিশেষ করে ইসলামকে হেয় করা থেকে বিরত থাকার বিধান প্রণয়ন করতে হবে।

● প্রাণীর মূর্তিনির্ভর ভাস্কর্য নির্মাণ না করে দেশীয় প্রকৃতি, ঐতিহ্যকে বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন-ভাস্কর্যে তুলে আনতে হবে।

● সকল গণমাধ্যমে শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম প্রচার নিশ্চিত করতে হবে।

পররাষ্ট্র বিষয়ক সংস্কার

● পররাষ্ট্রীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল গণতান্ত্রিক দেশের সাথে সাম্য ও নায্যতার ভিত্তিতে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

● জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় চীন, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার আন্তর্জাতিক নদীসমূহের পানিবণ্টন চুক্তির উদ্যোগ নিতে হবে।

● আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে।

● অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে বিগত সরকারের আমলে সম্পাদিত সকল চুক্তি রিভিউ করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি রিভিউ কমিশন গঠন করতে হবে।

● বাংলাদেশকে আসিয়ান জোটভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

● শক্তিশালী সার্ক পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

● কোনো দেশের সাথে চুক্তি অথবা সমঝোতা চুক্তি হলে পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে সেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক উত্থাপন করে বিস্তারিত আলোচনা পূর্বক তা অনুমোদন করতে হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সংস্কার

● ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশকে (ইফাবা) রাষ্ট্রের কল্যাণে অর্থবহ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

● ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিকে স্বতন্ত্র সংস্থা বা দপ্তরে রূপান্তর করতে হবে, যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।

● ইসলামিক মিশনকে সরাসরি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

● হজ ব্যবস্থাপনার জন্য স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

● হজ ও ওমরাহর খরচ কমানোর জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

● ইসলামিক ফাউন্ডেশনে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে দেশের বরণ্যে আলেমগণ সম্পৃক্ত থাকবেন।

● বিতর্কিত সকল বই বাতিল ও প্রকাশনা বন্ধ করতে হবে।

● সকল ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

Spread the love