হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ খেলাধুলা
মেজবা উদ্দিন পলাশ: গ্রাম-বাংলায় হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরও অসংখ্য খেলাধুলা। তবে সময়ের পালাবদলে দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে চোখে পড়ে না এসব খেলাধুলা।
যেমন হাডুডু ,লাঠিখেলা ,গোলাছুট, কানামাছি, মোরগলড়াই, গাদন খেলা, দড়ি খেলা, কিত কিত খেলা, বৌতোলা, বিস্কুট দোড়,ডাংগুলি, কপালটুক, সাঁতারসহ এসব খেলাধুলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।
গ্রামের খেলাধুলা সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা আছে এমন শিশু-কিশোরের খোঁজ এখন আর মেলে না। তাদের অনেকেই এসব খেলাধুলার গল্প শুনেছেন তার বাবা-মা, দাদা-দাদীর কাছে। খেলাধুলা যেন তাদের কাছে এখন হারানো ঐতিহ্য।
এবিষয়ে কথা বলি মিরপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও প্রবীন খেলোয়াড় চিত্তরঞ্জন পন্ডিত বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি আর খেলার মাঠ উপযোগী না থাকায়, স্মার্টফোনে ভিডিও গেমস’র প্রতি শিশু-কিশোরদের আসক্তি দিন দিন বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন , গ্রামীণ খেলাধুলার আলাদা কোনো ফেডারশেন না থাকায় একত্রিত হতে পারছেন না তারা। দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামীণ খেলাকে বাঁচাতে ফেডারেশনের কোনো বিকল্প নেই।
প্রবীন খেলোয়াড় ও মিরপুর মাহমুদা চৌধুরী কলেজের অধ্যাপক শাহ আক্তার মামুন বলেন, তখনকার সময় আমরা সবাই মিলে মিশে থাকতাম পড়াশুনার চাপ ছিলো কম তাছাড়া গোটা সমাজের লোকজন যেন একই পরিবারভুক্ত ছিলাম। তাই খুব সহজেই খেলা ধুলার পরিবেশ পেতাম। এমনকি সন্ধ্যার পরও আমরা চাঁদনী রাতে খেলাধুলা করতাম । আর এখন সময়টা প্রতিযোগিতার যুগ। ভোর থেকেই বই হাতে ছুটতে হয় লেখা পড়ার পেছনে। চলে রাত অবধি। তাই ইচ্ছে করলেও ছেলেমেয়েরা খেলা ধুলা করার সময় পায় না। তাছাড়া পরিবেশ, সমাজের পরিবর্তন, বিদেশী খেলাধুলার প্রভাব এমনকি রাজনৈতিক অবস্থা ছেলেমেয়েদের গ্রামীণ খেলাধুলা থেকে ফিরিয়ে রাখছে।
সুনতানপুর সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদরাসার ক্রীড়া শিক্ষক সাইদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রতিটি অভিভাবকের দায়িত্ব ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় ব্যস্ত রাখা। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার বিকল্প কিছু নেই। খেলাধুলা শিশু-কিশোরদের সুস্থ মন গড়ে তুলতে সাহায্য করে।