মুক্তামণির প্রথম অস্ত্রোপচার সফল

নিজস্ব প্রতিবেদক:
অক্ষত রেখেই মুক্তামণির ডান হাত থেকে প্রায় তিন কেজি ওজনের টিউমার অপসারণ করা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল পৌনে নয়টা থেকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। অস্ত্রোপচার শেষে দুপুর পৌনে ১২টায় ব্রিফিং করেন চিকিৎসকেরা।

প্রাথমিকভাবে অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। জ্ঞান ফিরে এসেছে মুক্তামণির। তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে মেডিকেল টিমের ২০ থেকে ২২ জন উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষ করে বার্ন ইউনিটের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবুল কালাম অস্ত্রোপচারের নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, ডান হাত অক্ষত রাখা হয়েছে। অস্ত্রোপচার প্রাথমিকভাবে সফল। তবে তাঁকে ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না। কারণ, তার ফুসফুসের সমস্যাসহ অন্যান্য জটিলতা রয়েছে। টিউমার শরীরের অনেক জায়গায় ছড়িয়েছিল। হাতের অংশটুকু বেশি খারাপ অবস্থায় ছিল। ওটা আজ অপসারণ করা হয়েছে। অপসারিত টিউমারটির ওজন প্রায় তিন কেজি।

মুক্তামণির শরীর থেকে সব টিউমার সরাতে আরও পাঁচ থেকে ছয়টি অস্ত্রোপচার লাগবে বলে জানান অধ্যাপক আবুল কালাম। ওর শারীরিক অবস্থা বুঝে পরবর্তী অস্ত্রোপচারের সময় ঠিক করা হবে। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে মুক্তামণিকে। যেদিন ও বাড়িতে ফিরতে পারবে, সেদিন আমরা বলতে পারব ও ঝুঁকিমুক্ত।’

ব্রিফিংয়ে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন বলেন, এই সফলতা সম্মিলিত উদ্যোগ। সবার প্রচেষ্টার ফলে আজকে প্রাথমিকভাবে সফল হওয়া গেছে।

ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক চিকিৎসক জুলফিকার লেনিন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এখন পর্যন্ত যখন যা লেগেছে, সব করা হয়েছে। এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

রক্তনালির টিউমারে আক্রান্ত মুক্তামণি এখন সবার কাছে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। সব ধরনের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।

সাতক্ষীরায় জন্মের দেড় বছর বয়স থেকে মুক্তামণির ডান হাতের সমস্যার শুরু। প্রথমে হাতে টিউমারের মতো হয়। ছয় বছর বয়স পর্যন্ত টিউমারটি তেমন বড় হয়নি। কিন্তু পরে তার ডান হাতটি ফুলে অনেকটা কোলবালিশের মতো হয়ে যায়। সে বিছানাবন্দী হয়ে পড়ে। মুক্তামণির রোগ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। গত ১১ জুলাই মুক্তামণিকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।

Spread the love