অমানবিক আচরণের শিকার চট্টগ্রামের ১৩ শিক্ষক!

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করে শিক্ষকদের কারাগারে পাঠানো জাতির জন্য লজ্জাজনক। বিষয়টির সহজ সমাধান করা যেত। তা না করে ঘটনাটিকে জটিল ও অমানবিক করে তোলা হয়েছে। কারাগারে থাকা ১৩ শিক্ষক এবং তাঁদের পরিবারের কাছে জাতির ক্ষমা চাওয়া উচিত। শিক্ষকদের মুক্তির দাবিতে গতকাল রোববার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সকাল ১০টায় অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। বেলা তিনটায় কবি ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন শরবত পান করিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের অনশন ভঙ্গ করান। চট্টগ্রামের ১৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার এবং মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখা। এতে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষকেরা অংশ নেন।

অনশন কর্মসূচিতে কবি আবুল মোমেন বলেন, যে জাতি শিক্ষকদের অমর্যাদা করে, জেলে ঢুকিয়ে রাখে, তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেয়, বুঝতে হবে সে জাতির শিক্ষা নিয়ে গোলমাল রয়েছে। উন্নত জাতি গঠনে শিক্ষকদের সামাজিক, পেশাগত ও আর্থিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হয়। একটি প্রশ্নপত্র প্রণয়ন নিয়ে শিক্ষকদের যে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, তা অকল্পনীয়। পরিস্থিতিকে অমানবিক করা হয়েছে।

১৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা সরকারের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে বলে মনে করেন না আবুল মোমেন। তিনি বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। সেখানে শিক্ষকদের বিরাট ভূমিকা আছে। এ বিষয়টি সরকারের মাথায় রাখতে হবে। ১৩ শিক্ষককে দ্রুত মুক্তি দিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

গত বছরের জুলাই মাসে চট্টগ্রামের ছয়টি উপজেলায় নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিষয়ের সৃজনশীল অংশের একটি প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে বাঁশখালী থানায় করা মামলায় ২৩ আগস্ট থেকে ১৩ শিক্ষক কারাগারে রয়েছেন।

শিক্ষকনেতা কানাই দাশ বলেন, ১৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কলঙ্ক সহজে ঘুচবে না। শিক্ষকদের নির্দোষ উল্লেখ করে তাঁদের মুক্তি দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সৈয়দ লকিতুল্লাহের সভাপতিত্বে অনশন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সমিতির উপদেষ্টা সুনীল চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক শিমুল মহাজন, চট্টগ্রাম নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কানুনগো, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি রণজিৎ নাথ, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক ছগির মোহাম্মদ, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিভাগীয় সভাপতি উত্তম চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।

Spread the love
%d bloggers like this: