দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে এসেছিল, হত্যা করা হলো এক মিনিটে

তিন শ জনেরও বেশি হতাহতকে অ্যাম্বুলেন্স ও প্রাইভেট কারে করে গাজা শহরের প্রধান হাসপাতাল আল-শিফায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আহতরা রক্তাক্ত মেঝেতে শুয়ে ব্যথায় চিৎকার করছেন। সংকটাপন্ন যাদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর সম্ভব হচ্ছে না তাদের ক্ষতিগ্রস্ত হাসপাতালের করিডোরেই অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে।প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে কারো কারো অস্ত্রোপচার হচ্ছে ‘অ্যানেস্থেসিয়া’ ছাড়াই।

মঙ্গলবার রাতে বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত গাজার আল-আহলি-আল-আরাবিয়া হাসপাতালের চিত্র এটি। দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, হামলায় হাসপাতালে থাকা কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছে। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৫০০ জন নিহত হয়েছে। আর সিভিল ডিফেন্সের এক মুখপাত্র নিহতের সংখ্যা প্রায় ৩০০ বলে জানিয়েছেন।

হামলার পর হাসপাতালটিতে চিকিৎসা দেওয়া চিকিৎকদের একজন জিয়াদ শেহাদাহ আল জাজিরাকে বলেন, ‘যা ঘটেছে তা ভয়াবহ। এখানে আসা সবাই বেসামরিক নাগরিক। তারা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে এখানে এসেছিল। তাদের বিশ্বাস ছিল এমন অবস্থায় হাসপাতালই নিরাপদ জায়গা।

শেহাদাহ বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গা থেকে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে অনেকে এখানে এসেছিলেন। তাদের এক মিনিটের মধ্যেই হত্যা করা হয়েছে।’

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, অনেকেই হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে অশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সময় বুধবার ফেসবুকে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেন, ‘চিকিৎসকরা মাটিতে এবং করিডোরে অস্ত্রোপচার করছেন।

তাদের মধ্যে কিছু রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘অনেক মানুষ এখনও অস্ত্রোপচারের জন্য অপেক্ষা করছে এবং ডাক্তারা তাদের জীবন বাঁচাতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আহতদের মধ্যে অনেক শিশু এবং নারী আছে।’

ফিলিস্তিনের বিখ্যাত চিকিৎসক খামিস এলেসি আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা বিকট বিস্ফোরণ শুনেছি। পুরো গাজা উপত্যকাকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। গাজায় হামলা বন্ধ করার জন্য আরব ও বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানানোর আগেই এমন ঘটনা ঘটল।’

হাসপাতালে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোর রাস্তায় শত শত মানুষ জড়ো হন। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে। একই সঙ্গে তারা প্রেসিডেন্টের পতন চেয়ে স্লোগান দেন।

Spread the love
%d bloggers like this: