ভারতের বিশ্বকাপ আয়োজনে ‘হীন মানসিকতা’

ভারতে বিশ্বকাপ শুরুর আগেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল। বিশ্বকাপের সূচি প্রকাশে দেরি করেছে বিসিসিআই। বিশ্বকাপ শুরুর পর ফাঁকা গ্যালারি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আর এখন চলছে ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশর স্টেডিয়ামের আউটফিল্ড নিয়ে সমালোচনা। বাংলাদেশ–আফগানিস্তান ম্যাচে ডাইভ দিয়ে একটুর জন্য হাঁটুতে বড় চোট পাওয়া থেকে বেঁচে যান আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমান।

আজ একই ভেন্যুতে বাংলাদেশ–ইংল্যান্ড ম্যাচেও তাওহিদ হৃদয়ে স্বস্তি নিয়ে ডাইভ দিতে পারেননি। ডেভিড ম্যালানের ইনসাইড আউট শট বাউন্ডারি সীমানায় ছুটে যাচ্ছিল। বাংলাদেশের ফিল্ডার হৃদয় ডাইভ দিয়ে বলটি আটকালেও উঠে দাঁড়ানোর পর তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বোঝা গেছে কিছুটা ভয়ে ভয়েই ডাইভ দিয়েছিলেন। নইলে হাত–পা ছিলে গেছে কি না, সেটা উঠে দাঁড়ানোর পর দেখতেন না।

একটু পেছন ফিরেও তাকানো যায়। বিশ্বকাপ শুরুর ১০০ দিন আগে সূচি প্রকাশ করেছিল বিসিসিআই। কিন্তু সূচি একাধিকবার পাল্টাতে হয়, এমনকি স্থানীয় পুলিশ নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিতে না পারায় ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের সূচিও পাল্টানো হয়। সব মিলিয়ে ৯টি ম্যাচের সূচি পাল্টানো হয়েছিল তখন। এ ছাড়া বিশ্বকাপ শুরুর আগে পাকিস্তান–নিউজিল্যান্ড প্রস্তুতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে দর্শকহীন স্টেডিয়ামে।

হায়দরাবাদ পুলিশ সে ম্যাচে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। অথচ বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও ক্ষমতাবান ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই এই প্রথম সম্পূর্ণ একার আয়োজনে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের আয়োজন করেছে এবার।

পাকিস্তানের স্থানীয় এক স্পোর্টস শোতে হাফিজ বলেছেন, ‘চার দিন হলো শুরু হয়েছে বিশ্বকাপ। এখন পর্যন্ত আয়োজকদের আয়োজন ও পরিকল্পনা আমার কাছে বাজে লেগেছে। সবচেয়ে বড় ইস্যু হতে পারে দর্শকের খরা। বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে গেলে একটু বড় চিন্তাভাবনা করতে হয়। ছোট মানসিকতা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।’ ধর্মশালার আউটফিল্ড নিয়েও কথা বলেন হাফিজ, ‘এটা নিয়ে কেউ কথা বলছে না। কিন্তু ধর্মশালার আউটফিল্ড নিয়ে প্রশ্ন আছে। এটা খেলোয়াড়দের জন্য নিরাপদ নয়।’

বিশ্বকাপের টিকিট–বিক্রি নিয়েও সমালোচনা চলছে। প্রায় দুই ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করেও টিকিট পাচ্ছেন না ক্রিকেটপ্রেমীরা। দেখানো হচ্ছে ‘বিক্রি হয়ে গেছে।’ এবার বিশ্বকাপে টিকিট বিক্রির অফিশিয়াল পার্টনাম ‘বুকমাইশো’র ওয়েবসাইটে গেলে দেখানো হচ্ছে টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। উইজডেন জানিয়েছে, এই ওয়েবসাইটে দর্শকেরা ঢুকে দেখতে পাচ্ছেন, বিশ্বকাপে সব কটি ম্যাচেরই টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। কিন্তু ম্যাচের দিন গ্যালারির বেশির ভাগ জায়গা ফাঁকাই দেখা যাচ্ছে। অন্তত তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রায় দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে।

ভারতের বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে অভিযোগ আছে আরও। পাকিস্তান এরই মধ্যে একটি ম্যাচ খেলে ফেললেও দেশটি থেকে সংবাদকর্মী ও সমর্থকেরা এখনো ভারতে যেতে পারেননি। ভারত এখনো তাঁদের ভিসা মঞ্জুর করেনি। এ নিয়ে পাকিস্তান সরকারকে হস্তক্ষেপ করার আহবান জানিয়েছে পিসিবি। পাকিস্তানের হয়ে ৫৫ টেস্ট, ২১৮ ওয়ানডে ও ১১৯ টি–টোয়েন্টি খেলা এ নিয়েও সুর চড়া করেছেন, ‘যেখান থেকেই আসুক না কেন, প্রতিটি দলের ভক্তদের ভিসা পাওয়া উচিত। বৈশ্বিকভাবে বিষয়টি সামলাতে না পারলে এর প্রভাবও পড়বে বৈশ্বিকভাবে।’

 

Spread the love
%d bloggers like this: