হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে সন্তান বিক্রি করলেন বাবা-মা!

তৈয়বুর ইসলাম, গাজীপুর:  হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে এ দম্পতি বিক্রি করেন ১১ দিনের সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে।

সন্তান প্রসবের পর হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পারায় নিজের সন্তানকে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন এ দম্পতি। পরে সন্তান বিক্রির ২৫ হাজার টাকা দিয়ে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন শরীফ কেয়া দম্পত্তি। বিল মিটিয়ে সন্তান ছাড়াই বাড়ি ফেরেন তারা।

বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নজরে এলে ওই শিশু সন্তানটিকে তার বাবা-মার কাছে ফেরত এনে দেন পুলিশ কতৃপক্ষ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন।
ঘটনার সত্যতা জানতে পেরে তড়িৎ পদক্ষেপ নেন তিনি। নিজেই টাকা পরিশোধ করে সন্তানকে তার মার কোলে ফিরিয়ে দেন তিনি।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গত ২১ এপ্রিল গর্ভবতী অবস্থায় কেয়া খাতুন নামে এক নারী কোনাবাড়ী এলাকায় অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই সিজারের মাধ্যমে তার একটি পুত্র সন্তান হয়। তার স্বামী মো. শরীফসহ তারা মহানগরের এনায়েতপুর এলাকায় বসবাস করে পোশাক কারখানায় চাকুরি করে আসছিল।

কেয়া খাতুন ওই হাসপাতালে ১১ দিন ভর্তি ছিল। এতে হাসপাতালের বিল আসে ৪২ হাজার টাকা। এত টাকা পরিশোধ করার মত সামর্থ্য ছিল না মো. শরীফ- কেয়া খাতুন দম্পতির। একপর্যায়ে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে বাধ্য হয় সন্তান বিক্রি করতে সিদ্ধন্ত নেন। পরে ১ মে শুক্রবার ২৫ হাজার টাকায় তাদের ১১ দিন বয়সের পুত্র সন্তান বিক্রি করে দেন। সন্তান বিক্রির সেই টাকায় হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে বাড়ি ফিরে যান ওই দম্পতি।

পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশের অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক (আইজি-এসবি) শহিদুল ইসলামের নজরে আসে। পরে তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি অবগত করেন। একপর্যায়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন ২৫ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়ে ওই শিশুটিকে ফেরত আনেন। পরে মো. শরীফ- কেয়া খাতুন দম্পতির ১১ দিন বয়সের পুত্র সন্তানকে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেন এবং মো. আনোয়ার হোসেন নবজাতককে নিয়ে হাজির হন শরীফ হোসেনের বাড়ি।  মায়ের কোলে তুলে দেন ফুটফুটে শিশুটিকে। পাশাপাশি সন্তানকে লালন-পালনের জন্য আরো পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন ওই দম্পতির হাতে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। এডিশনাল আইজি (এসবি) স্যারের মাধ্যমে ঘটনাটি শোনার পর খুব খারাপ লেগেছিল।  খোঁজ খবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। সন্তানটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমার খুব ভালো লেগেছে।

Spread the love
%d bloggers like this: